Posts

Showing posts from October, 2018

আমাদের হ্যালোইন

Image
#হ্যালোইন আজ নাকি হ্যালোইন। আমি আজও এর ফান্ডাটা বুঝে উঠতে পারিনি। ভুতুড়ে কিছু, এইটা বুঝেছি। ভুতের মত সেজে গুজে ঘুরতে হবে, পার্টি করতে হবে, এইটুকু বুঝলেও, কুমড়ো টা কোন কাজে লাগে, আজ অবধি বুঝতে পারলাম না। আজ অবধি বেশ কিছু হ্যালোইন সাজ দেখেছি, অন্যতম মহারানীকেই। সদ্য বিয়ে করে জামশেদপুরে সংসার পেতেছি তখন। এক রবিবার, সন্ধ্যেবেলা পার্টি আছে, এদিকে ডিউটি পড়ল বিকেল অবধি। উনি রেগে টং, কারণ পার্টি উপলক্ষে ওনাকে পার্লার নিয়ে যাবো কথা দিয়েছিলাম। অনেক কষ্টে, "তাড়াতাড়ি ফিরে নিয়ে যাবো", এই সব ভূজুং ভাজাং দিয়ে ও খাসির মাংস এনে দিয়ে অফিস কেটে পড়লাম। বলে গেলাম, ক্যান্টিনে খেয়ে একেবারে ফিরবো, নিজে যেন খেয়ে  নেয়। কিন্তু ভাগ্য সহায়, কাজটা তাড়াতাড়ি মিটে গেল, আড়াইটার মধ্যে। ফোন করলাম, দেখি রেগে সুইচড অফ করে রেখেছে। ভাবলাম, বাড়ি ফিরে সারপ্রাইজ দেব, একসাথে মটন কষা দিয়ে লাঞ্চ করবো। চুপি চুপি ফিরে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই দেখি ভর দুপুরে পর্দা টর্দা টেনে লিভিং রুম অন্ধকার। টিভিতে ববি দেওল কাজলের "গুপ্ত" চলছে। আমিও চুপচাপ সোফায় বসে পড়লাম। হঠাৎ বাথ...

লারেলাপ্পা, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও মটন বিরিয়ানী

Image
কখনও এরকম হয়েছে আপনার সাথে। লারেলাপ্পা গানের সাথে কোমর দোলাতে এসেছিলেন, কিন্তু গায়ক গান ধরতে বুঝলেন, গায়ক গানের লিরিক্স টা সেম রেখে রবীন্দ্রসঙ্গীত এর সুরে গাইছে? কি বললেন? হতে পারে না। "Yeh Dillagi" সিনেমার "যব ভি কোই লড়কি দেখু" গানটা "পুরানো সেই দিনের কথা"র সুরে গুনগুন করে দেখুন, বুঝতে পারবেন। ক্লিয়ার হলো না তো!! এই ভাবে গান👇👇 যব ভি কোই (পুরানো সেই) লড়কি দেখু (দিনের কথা) মেরা দিল (ভুলবি কি রে) দি-ও-আনা বোলে (হায় ও সেই) ওওওলে (চোখে দেখা) ওওওলে (প্রাণের কথা) ওওওওওলে (সে কি ভোলা যায় ) একই রকম ফিলিংস চান? চলে আসুন পাল্লাডাম তামিলনাড়ু তে। Coimbatore থেকে একটু দূরে। আপনাকে কেউ বলবে "স্যার, মটন বিরিয়ানী লেকে আউ?" বেশি উৎসাহ না দেখিয়ে বলবেন "বিরিয়ানী? ইধার?" "বাড়িয়া হ্যায় স্যার, স্পেশাল আম্বুর দম বিরিয়ানী।" টাকা দিয়ে বলবেন "আচ্ছা হোগা, তো হি লানা" তারপর আপনার উৎসুক ও ক্ষুধার্ত পাতে এসে যা পড়বে, যদি একই ফিলিংস না আসে তো আমায় বলবেন। ©সুব্রত চৌধুরী

পুজো ও বামুন

Image
লক্ষ্মীপুজো সরস্বতী পুজো আসলেই পৈতে ধারী বামুনের চাহিদা তুঙ্গে উঠে যায়। সবার বাড়িতে পুজো আর তাই পুরুতকে নিয়ে টানাটানি চলে ভীষণ। এমনি দিনে যে সব বামুন পুজো আচ্চার ধার ধারে না, জীবনে আহ্নিক করেছে কিনা সন্দেহ, তাদেরকেও দেখতাম এই দু দিন ধুতি পড়ে, নামাবলী জড়িয়ে মায় গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার পৈতে হয় ক্লাস সেভেনে। আমাদের বাড়ির কেউ কোনোদিন বাড়ির বাইরে পুজো করেনি, মানে যজমানী করেনি। বাবা, দাদা বা আমি, কেউই তার ব্যতিক্রম হই নি। আমাদের বাড়িতেও আগে পুরোহিত এসেই লক্ষ্মী সরস্বতী পুজোর দিন পুজো করত। চেনা পুরোহিত, দূরসম্পর্কের আত্মীয়। কিন্তু কখনো রাত দশটায় বা বিকেল চারটে তে লক্ষ্মী পুজো অথবা ভোর পাঁচটায় সরস্বতী পুজো করতে আসাটা রেওয়াজ হয়ে দাঁড়ানোয়, বিরক্তির পরিমাণ বাড়তে লাগলো। বিশেষত দেরী হলে কোন বাড়িতে আছে, এবং খুঁজে আনা, বিরাট ঝক্কির কাজ ছিল। উল্টোদিকে পুরোহিতের বিরক্তিও বাড়তে থাকে, কারণ, না ভুলভাল মন্ত্র পড়ে পুজো করতে পারে, না শর্টকাটে সারতে পারেন। শেষ অবধি বাবা ঠিক করলেন, বাড়ির পুজো নিজেই করবেন। আমার ও দাদার পৈতের আগের বছরই প্রথমবার বাবা নিজ...

গেনুর ব্লগ থেকে

Image
"একটা কনফার্মড টিকিট ও কাটতে পারে না মিনসে টা। উফফ কি যে করি!!" সকাল সকাল মায়ের গজগজানি তে ঘুম ভেঙে গেল। মায়ের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেই কবে, মহালয়ারও আগে রওনা দিতে হয়েছিল এবার। একবার বাবাকে দিয়ে ফোন করিয়েছিল "পরমান্নে", যদি রওনা টা একটু পিছানো যায়। ফোনটা স্পিকারেই ছিল, ওপাশ থেকে উত্তর এলো "নিজের ভালো পাগলেও বোঝে "ভোলু", কিন্তু তোকে নিয়ে আর পারি না। বলি এত এত নতুন মদের দোকান খুলে দিলাম, ড্রাই ডে তুলে দিলাম, তা বউ যদি বেশিদিন বাপের বাড়িতে থাকে কার লাভ শুনি?" ব্যাস, বাবাকে আর পায় কে। পাঁচটা ৭২ ইঞ্চির আমেরিকান টুরিস্টার কিনে এনে মালপত্তর প্যাক করতে শুরু করে দিলো। মা নিজে আরেকবার ফোন করেছিল বটে, বোঝাতে চেষ্টা করেছিল। "মহালয়ার আগে তো প্রেত পক্ষ, তখন তো "তিন্নাথ" মিলেও আমায় বানায়নি। অন্তত প্রতিপদ..........." উল্টো দিক থেকে "মেরা বচন হি মেরা শাসন হ্যায়" শুনে আর কথা বাড়ায় নি মা। আসার সময় তবু একটা ভালো ছিল। আগে আগে এসে যাওয়ায় পুজোর কিছু শপিং ও করে নিতে পেরেছিল মা। দিদিরা ও কেতো টাও সেরে নিয়েছে মা...

আমার পুজো - সেকাল ও একাল (শেষ পর্ব)

Image
  নিজ ভূম ও প্রবাস (শেষ পর্ব) দেখতে দেখতে জীবনটা কেমন পাল্টে যেতে লাগলো। নব্বই এর দশকের শেষ লগ্নে এসে খুব দ্রুত পট পরিবর্তন হতে শুরু করলো মহানগরের দুর্গাপুজোর। বাড়তে শুরু করলো বাজেট। পুরস্কার পাওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠতে শুরু করল যেন সমস্ত পুজো কমিটি। ধীরে লয়ে সেই সুযোগ টা নিয়েই প্রবেশ করলো থিম, আজ যা বাঙালির উৎসবকেই গ্রাস করে নিল। যাদবপুরে পড়ি তখন, তাই নিজেদের পুজো শপিং এর পীঠস্থান তখন গড়িয়াহাট। গোলপার্ক থেকে গড়িয়াহাট এর মধ্যের ফুটপাথ থেকে একটা জিন্স ও একটা টি শার্ট মানেই পুজো কমপ্লিট। কিন্তু সেটাও খেপে খেপে কেনা হতো, আজ এই বন্ধুর তো কাল আরেকজনের। কোনোদিন বেদুইন এর রোল, তো কোনদিন দাশ কেবিনের মোগলাই। কেনাকাটার সাথে সাথে খাওয়া দাওয়া টাও কমতে লাগলো। কারণ টাকা জমাতে হবে, পুজোর কদিনের জন্যে। কুমোরটুলি থেকে ঠাকুর আনতে যাওয়ার সময় একটু বাড়তি দায়িত্ব থাকতো, আমার উপর বিশেষ করে। রঙিন দুনিয়ার লোকজনকে সামলে রাখার, শর্ত একটাই তাদের চাটের ভাগ দিতে হবে। ফলে কুমোরটুলি গেলে খাওয়াদাওয়া টা ভালোই হত, ডিম পাউরুটি থেকে অমলেট, ছোলা মাখা থেকে চিকেন পকোড়া। রাতের কলকাতায় যে ...

আমার পুজো - সেকাল ও একাল (পর্ব ২)

Image
পাখা গজানো পর্ব আসতে আসতে পাখা গজালো, ইয়ে মানে কৈশোর কাল (ক্লাস এইট থেকে টুয়েলভ)। ইয়া বড় রেডিওর পাশেই ছোট ট্রানজিস্টর এলো বাড়িতে। মহালয়ার সকালে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার অভ্যাসটা একই রইল। পুজোর মার্কেটিং এ এক সেট জামা প্যান্টের কাপড় বাবা মা কিনে আনতেন। বাকিটা (জিন্স, টি শার্ট, গেঞ্জি, বেল্ট) বন্ধুদের সাথে কিনতে না গেলে তো প্রেস্টিজে গ‍্যামাকসিন। উড়ু উড়ু মন খুবই উতলা, তাই সকাল সকাল চলো ধর্মতলা। আর সেখানে পৌঁছেই যেন লালমোহন বাবুর উপন্যাসের সম্মুখীন, "ধর্মতলায় ধর্মসংকট"। নিউ মার্কেট, ময়দান মার্কেট, শ্রীরাম আর্কেড একদিকে ও অন্যদিকে নিজাম, আমিনিয়া, সাবির, অনাদি। Levi's এর জিন্সের দামের সাথে নিজামের রোল বা কাবাব এর দামের জোরদার হিসেব নিকেশ চলত। খ্যাটনের দিকে নজর দিতে গিয়ে সস্তায় জিন্স খুঁজে বার করতে হত। একটু বেশি সেভিংস হলেই তো সাবিরের রেজালা। সাথে দশ দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নিয়ে টুক করে রিগ্যাল, সোসাইটি বা নিউ এম্পায়ার, লাইট হাউস, গ্লোবে (পোস্টার দেখে হল ঠিক হতো) ঢুকে পড়া। শেষের তিনটে হলে ঢুকলে পকেটে অবধারিত ভাবে টান পড়ত। তখন ডেকার্স লেন ভরসা, আর একেবারে...

আমার পুজো - সেকাল ও একাল (পর্ব ১)

Image
আমার পুজো - সেকাল ও একাল (পর্ব ১) ছোটবেলা "ওরে ওঠ ওঠ, পৌনে চারটে বাজে, ওঠ।" "তুমি চালাও না, আমি শুয়ে শুয়েই শুনবো।" কাঁথাটা মুড়িয়ে কথা গুলো বলেই পাশ ফিরে আবার ল্যাদ খাওয়ার তোড়জোড় শুরু করতাম। "আরে বাবা, চললে কি আর তোকে এত বাবা বাছা করি, এরিয়াল থেকে তাঁর খুলে পরে গেছে। কতবার তোর বাবাকে বলেছি ঘরে ইঁদুর হয়েছে, কে কার কথা শোনে। একটু টুলে উঠে ওটা লাগিয়ে শুয়ে পর, আর কিচ্ছু বলব না।" কি আর করা যায়। শরতের ভোরে হালকা হিমেল হাওয়ায় কাঁথার মায়া ত্যাগ করে উঠতেই হল। কোনো মতে রেডিওর তাঁর খুঁজে ঘুম চোখে নড়বড়ে টুলে উঠে এরিয়েলের জালে লাগিয়ে নিচে নামতেই চালু হয়ে গেল শ্রী বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ। আপামর বাঙালির দুর্গাপুজোর ফাইনাল কার্টেন রাইসার। আমাদের অবশ্য দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হত সেই রথের সময় থেকে। পাড়ার ক্লাবে বড়দের মিটিং, পুজোর বাজেট ঠিক হবে। আমাদের নজর ইটিং এ, মানে সুকুমারদার দোকানের সিঙ্গারা তে। তখন তো থিম, খায় না মাথায় দেয় কিছুই জানা ছিল না, শুধু প্যান্ডেলের আয়তন ও ভিতরে শুধু কাপড়ের কাজ না সাথে শোলা, এই নি...