কর্পোরেট মিটিং এবং ইটিং
#কর্পোরেট_মিটিং_এবং_ইটিং
ছবিটা ভালো করে লক্ষ্য করুন। একদম পারফেক্ট প্লেটিং। কিন্তু এই মিটিংয়ে এগুলো খাওয়ানোর মানে কি বলুন তো?
প্রথমেই ধরুন এই স্যান্ডউইচ। অফিস পরিবার আর হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের মাঝে লাইফটা এমনিই স্যান্ডউইচ হয়ে গেছে সবার। আপনার অফিসের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এর লোকজন যাকে পাবে তাকেই পটেন্সিয়াল ক্লায়েন্ট হিসেবে ধরে নিয়ে আসবে। সেই আগেকার দিনে মেয়ের উপর রেগে গেলে লোকজন যেমন বলত, "সকালে উঠে কানা খোড়া যার মুখ প্রথম দেখবো, তার সাথেই তোর বিয়ে দিয়ে দেব", সেটা তারা বাস্তবে না করে দেখালেও এনারা বাস্তবায়িত করেই ছাড়বে। নিজেদের কোটা কমপ্লিট। এবার বাড়ির লোক মিলে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে, মানে ম্যানেজমেন্ট আপনার ঘাড়ে প্রজেক্টটা ফেলে দেবে, যার মাথা মুন্ডু খুঁজতে গিয়ে আপনার মাথা ঘুরে যাবে। সেই ছেলের (ক্লায়েন্টের) চাহিদা বিশাল, কিন্তু চাহিদা টা যে আসলে কি, সেটা সে নিজেও জানে না। কিন্তু তার জিনিসটা চাই। অনেক কষ্টে তার যাও একটা ধোঁয়াটে ধারণা পেলেন, বিয়ের পর (প্রজেক্ট নেওয়ার পর) জানতে পারলেন তার চাল চুলোর ঠিক (সঠিক বাজেট) নেই। যা আছে তাই দিয়ে মাথার উপর ছাদ আর ডাল ভাতের যদিবা ব্যবস্থা হয়, ওনার আবার তাতে পোষাবে না। কথা শুনে মনে হবে অট্টালিকা ও বিরিয়ানী দরকার। কিন্তু অমল দত্ত যে বলেছিলেন, "শুক্তোর মশলা দিয়ে বিরিয়ানী বানানো যায় না", সেটা, না আপনি পাত্রকে (ক্লায়েন্ট) বোঝাতে পারবেন, না নিজের বাড়ির লোককে (ম্যানেজমেন্ট) বুঝিয়ে ডিভোর্সে রাজি করাতে পারবেন। ফলে স্যান্ডউইচ লাইফটা আরো একটু বেশি চাপ খাবে, আর দেখবেন মেয়নিজ ও চিজের মত বাইরে দিয়ে গলে গলে পড়ছে। সসের পাউচ টাকে যেভাবে চিপে চিপে শেষ অবধি বার করতে হয়, আপনাকেও সেইভাবে নিংড়ে নেবে।
আপনি বেশি হাউমাউ করলে বাপের বাড়ি থেকে একজন কাউকে পাঠিয়ে দেবে আপনাকে সাপোর্ট দিতে, মানে এইচআর থেকে আপনাকে রিসোর্স দেবে। কেমন বলুন তো? একটা ফুটবল টিমে গোলকিপার পালিয়ে গেছে ম্যাচের আগে, তাই সব কর্মকর্তা বেরিয়েছে গোলকিপার খুঁজতে। শিয়ালদহ কোলে মার্কেটের কাছে একজন কে দেখল ম্যাটাডোরের উপরে দাঁড়িয়ে আছে, নিচ থেকে একজন তরমুজ ছুড়ে দিচ্ছে আর সে পারফেক্ট গ্রিপিংয়ে তা ধরে নিচ্ছে। তাকেই গোলকিপার বানিয়ে নিয়ে এল। খেলায় প্রথম শট আসতেই সে কি গ্রিপ!! প্রথমবারেই কেল্লা ফতে, ম্যানেজমেন্টের ব্লু আই। কিন্তু তারপর ধরে নিয়েই বা দিকের বগলের তলা দিয়ে পিছনে বলটা ফেলে দেবে, গাড়িতে তরমুজ লোড করার অভ্যেস তো এত তাড়াতাড়ি ভোলা যায় না। এমন সেমসাইড গোল খাওয়ানো রিসোর্স বা সাপোর্ট টিম নিয়ে, অলরেডি স্যান্ডউইচ হয়ে যাওয়া লাইফটা দেখবেন প্লেটের ফ্রাই গুলোর মতই ভাজা ভাজা হয়ে গেছে।
এবার বাড়ির লোক যদি দেখে, এমতাবস্থায় পড়ে আপনি ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন, তখনই দুটো পেস্ট্রি হাজির করবে, ইনক্রিমেন্ট আর প্রমোশন, ওই টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করা বা ঘর সাজিয়ে দেওয়া আর কি। হুহু বাওয়া, ভাবছেন তো যাক, নিজের আখের টা ঠিক আছে শেষ অবধি? মোটেও না। কাটা চামচ দিয়েই খান আর হাত দিয়ে, ওই পেস্ট্রি খেতে গিয়ে গ্যাদ গ্যাদে ক্রিম, হয় হাতে লাগবে নয় তো শার্টে।
তাই বাড়ির লোকের (ম্যানেজমেন্ট) দ্বারা খুড়োর কলে ঝোলানো পেস্ট্রির (ইনক্রিমেন্ট / প্রমোশন) নাগাল যদিওবা পান, টিস্যু পেপার দিয়ে আঙ্গুলে লেগে থাকা ক্রিমটা মুছে দেখবেন, লাইফটা শেষ মেষ ওই টিস্যু পেপারটার মতই দুমড়ে মুচড়ে নেতিয়ে গেছে।
©সুব্রত চৌধুরী
ছবিটা ভালো করে লক্ষ্য করুন। একদম পারফেক্ট প্লেটিং। কিন্তু এই মিটিংয়ে এগুলো খাওয়ানোর মানে কি বলুন তো?
প্রথমেই ধরুন এই স্যান্ডউইচ। অফিস পরিবার আর হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের মাঝে লাইফটা এমনিই স্যান্ডউইচ হয়ে গেছে সবার। আপনার অফিসের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এর লোকজন যাকে পাবে তাকেই পটেন্সিয়াল ক্লায়েন্ট হিসেবে ধরে নিয়ে আসবে। সেই আগেকার দিনে মেয়ের উপর রেগে গেলে লোকজন যেমন বলত, "সকালে উঠে কানা খোড়া যার মুখ প্রথম দেখবো, তার সাথেই তোর বিয়ে দিয়ে দেব", সেটা তারা বাস্তবে না করে দেখালেও এনারা বাস্তবায়িত করেই ছাড়বে। নিজেদের কোটা কমপ্লিট। এবার বাড়ির লোক মিলে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে, মানে ম্যানেজমেন্ট আপনার ঘাড়ে প্রজেক্টটা ফেলে দেবে, যার মাথা মুন্ডু খুঁজতে গিয়ে আপনার মাথা ঘুরে যাবে। সেই ছেলের (ক্লায়েন্টের) চাহিদা বিশাল, কিন্তু চাহিদা টা যে আসলে কি, সেটা সে নিজেও জানে না। কিন্তু তার জিনিসটা চাই। অনেক কষ্টে তার যাও একটা ধোঁয়াটে ধারণা পেলেন, বিয়ের পর (প্রজেক্ট নেওয়ার পর) জানতে পারলেন তার চাল চুলোর ঠিক (সঠিক বাজেট) নেই। যা আছে তাই দিয়ে মাথার উপর ছাদ আর ডাল ভাতের যদিবা ব্যবস্থা হয়, ওনার আবার তাতে পোষাবে না। কথা শুনে মনে হবে অট্টালিকা ও বিরিয়ানী দরকার। কিন্তু অমল দত্ত যে বলেছিলেন, "শুক্তোর মশলা দিয়ে বিরিয়ানী বানানো যায় না", সেটা, না আপনি পাত্রকে (ক্লায়েন্ট) বোঝাতে পারবেন, না নিজের বাড়ির লোককে (ম্যানেজমেন্ট) বুঝিয়ে ডিভোর্সে রাজি করাতে পারবেন। ফলে স্যান্ডউইচ লাইফটা আরো একটু বেশি চাপ খাবে, আর দেখবেন মেয়নিজ ও চিজের মত বাইরে দিয়ে গলে গলে পড়ছে। সসের পাউচ টাকে যেভাবে চিপে চিপে শেষ অবধি বার করতে হয়, আপনাকেও সেইভাবে নিংড়ে নেবে।
আপনি বেশি হাউমাউ করলে বাপের বাড়ি থেকে একজন কাউকে পাঠিয়ে দেবে আপনাকে সাপোর্ট দিতে, মানে এইচআর থেকে আপনাকে রিসোর্স দেবে। কেমন বলুন তো? একটা ফুটবল টিমে গোলকিপার পালিয়ে গেছে ম্যাচের আগে, তাই সব কর্মকর্তা বেরিয়েছে গোলকিপার খুঁজতে। শিয়ালদহ কোলে মার্কেটের কাছে একজন কে দেখল ম্যাটাডোরের উপরে দাঁড়িয়ে আছে, নিচ থেকে একজন তরমুজ ছুড়ে দিচ্ছে আর সে পারফেক্ট গ্রিপিংয়ে তা ধরে নিচ্ছে। তাকেই গোলকিপার বানিয়ে নিয়ে এল। খেলায় প্রথম শট আসতেই সে কি গ্রিপ!! প্রথমবারেই কেল্লা ফতে, ম্যানেজমেন্টের ব্লু আই। কিন্তু তারপর ধরে নিয়েই বা দিকের বগলের তলা দিয়ে পিছনে বলটা ফেলে দেবে, গাড়িতে তরমুজ লোড করার অভ্যেস তো এত তাড়াতাড়ি ভোলা যায় না। এমন সেমসাইড গোল খাওয়ানো রিসোর্স বা সাপোর্ট টিম নিয়ে, অলরেডি স্যান্ডউইচ হয়ে যাওয়া লাইফটা দেখবেন প্লেটের ফ্রাই গুলোর মতই ভাজা ভাজা হয়ে গেছে।
এবার বাড়ির লোক যদি দেখে, এমতাবস্থায় পড়ে আপনি ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন, তখনই দুটো পেস্ট্রি হাজির করবে, ইনক্রিমেন্ট আর প্রমোশন, ওই টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করা বা ঘর সাজিয়ে দেওয়া আর কি। হুহু বাওয়া, ভাবছেন তো যাক, নিজের আখের টা ঠিক আছে শেষ অবধি? মোটেও না। কাটা চামচ দিয়েই খান আর হাত দিয়ে, ওই পেস্ট্রি খেতে গিয়ে গ্যাদ গ্যাদে ক্রিম, হয় হাতে লাগবে নয় তো শার্টে।
তাই বাড়ির লোকের (ম্যানেজমেন্ট) দ্বারা খুড়োর কলে ঝোলানো পেস্ট্রির (ইনক্রিমেন্ট / প্রমোশন) নাগাল যদিওবা পান, টিস্যু পেপার দিয়ে আঙ্গুলে লেগে থাকা ক্রিমটা মুছে দেখবেন, লাইফটা শেষ মেষ ওই টিস্যু পেপারটার মতই দুমড়ে মুচড়ে নেতিয়ে গেছে।
©সুব্রত চৌধুরী
Comments
Post a Comment