"দোলি হ্যায়"
"কি রে, কাল কেমন কাটলো?" ইচ্ছা করেই মজা নেওয়ার জন্যে প্রশ্নটা করলাম।
"একদম কথা বলবি না তোরা। বন্ধুর নামে কলঙ্ক। আমায় একলা ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গেলি সব।"
"একদম কথা বলবি না তোরা। বন্ধুর নামে কলঙ্ক। আমায় একলা ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গেলি সব।"
না পালাবে না! ওনাকে পুজো করবে!!!
খেয়েছিলেন খালি পেটে তিন গেলাস ভাং দেওয়া ঠান্ডাই। তারপর বেশ কিছুক্ষণ ক্লাবের ঘরে টান টান হয়ে শুয়ে ছিল, উঠে ক্যারাম খেলতে গেলেন। কিন্তু ক্যারাম বোর্ডের বিট হঠাৎ করেই রূপান্তরিত হয়ে গেল ডার্ক চকোলেটে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার বৃথা চেষ্টা করে তিনি মতিচুরের লাড্ডু দেখতে পেলেন, ক্যারাম বোর্ডের উপরে ঝুলন্ত ২০০ ওয়াটের বাল্বে। যতই বোঝানো হয়, উনি লক্ষ্যে অবিচল। শেষ অবধি "যা পারিস কর" বলে ছেড়ে দিতেই উনি জ্বলন্ত বাল্বে ঠোঁট ছুঁইয়ে ছ্যাকা খেতেই সে কি কান্না।
আমরা যতই সান্তনা দিতে যাই, মহাশয়ের কানে কিছুই ঢোকে না। তার একটাই গো, "আমার মা আদর করে হাত বুলিয়ে দিলেই কমে যাবে।" আর আমরা তো জানি, কাকিমা ওকে এই অবস্থায় দেখলে, ওর সাথে আমাদেরও চ্যালা কাঠ দিয়ে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেবে। তাই তাকে যেনতেন প্রকারে নিরস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি যাবেনই। ক্লাব থেকে বেরিয়ে রং মেখে সং সাজা চেহারা নিয়েই পৌঁছে গেলেন বাড়িতে, তবে নিজের নয়, ক্লাবের এক সিনিয়ার দাদার বাড়িতে। সেই সিনিয়ারের ও যথেষ্ট "সুনাম" ছিল দোল বা এমন বিশেষ বিশেষ দিনে বাড়ি ফেরায়, তাই ওনার মা ও রেডি থাকতেন চ্যালা কাঠ নিয়ে। এই মহারাজ গিয়ে ওনার পা জড়িয়ে ধরে "আমি তোমার ছেলে" বলে উঠতেই উনি প্রথমে কিছুটা থতমত খেয়ে গেছিলেন। অভ্যাস বসে চ্যালা কাঠ তুলে নিয়ে যখন বুঝলেন যে এটা তার নিজের ছেলে নয়, তখন ভাবলেন চোর। এবং তারপরে কাঠের টুকরোর সদ্ব্যবহার শুরু করতেই আমরা দেখলাম দোতলার বারান্দা থেকে এক লাফে রাস্তায় নেমেই তিনি দৌড় দিলেন ভিআইপি রোডের পাশে খালের দিকে।
আমরা যতই সান্তনা দিতে যাই, মহাশয়ের কানে কিছুই ঢোকে না। তার একটাই গো, "আমার মা আদর করে হাত বুলিয়ে দিলেই কমে যাবে।" আর আমরা তো জানি, কাকিমা ওকে এই অবস্থায় দেখলে, ওর সাথে আমাদেরও চ্যালা কাঠ দিয়ে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেবে। তাই তাকে যেনতেন প্রকারে নিরস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি যাবেনই। ক্লাব থেকে বেরিয়ে রং মেখে সং সাজা চেহারা নিয়েই পৌঁছে গেলেন বাড়িতে, তবে নিজের নয়, ক্লাবের এক সিনিয়ার দাদার বাড়িতে। সেই সিনিয়ারের ও যথেষ্ট "সুনাম" ছিল দোল বা এমন বিশেষ বিশেষ দিনে বাড়ি ফেরায়, তাই ওনার মা ও রেডি থাকতেন চ্যালা কাঠ নিয়ে। এই মহারাজ গিয়ে ওনার পা জড়িয়ে ধরে "আমি তোমার ছেলে" বলে উঠতেই উনি প্রথমে কিছুটা থতমত খেয়ে গেছিলেন। অভ্যাস বসে চ্যালা কাঠ তুলে নিয়ে যখন বুঝলেন যে এটা তার নিজের ছেলে নয়, তখন ভাবলেন চোর। এবং তারপরে কাঠের টুকরোর সদ্ব্যবহার শুরু করতেই আমরা দেখলাম দোতলার বারান্দা থেকে এক লাফে রাস্তায় নেমেই তিনি দৌড় দিলেন ভিআইপি রোডের পাশে খালের দিকে।
কিছুটা তফাৎ রেখে আমরাও দেখতে থাকলাম ওনার কাণ্ডকারখানা। প্রথমে জলের মধ্যে উপর থেকেই স্নোরকেলিং করার চেষ্টা হল। বিফল হয়ে কিছু কচুরিপানা তুলে গবেষণা করতে শুরু করলেন। সেই কচুরিপানা অবশেষে মাথায় পাগড়ির মত দিয়ে ও একটা ডাল কে মাইক বানিয়ে, ভিআইপি রোডের পাশে তিনি তখন কিশোর কুমার।
এমতবস্থায় হঠাৎ একটি পুলিশ প্যাট্রলিং ভ্যান এর উদয়। সাধারণত দোল বা হোলির দিন রাস্তায় মাতালদের অসভ্যতামো করতে দেখলেই তুলে নিয়ে যেত, এই গাড়িতে। এনাকেও ওঠাতে যেতেই ইনি পরমানন্দে কনস্টেবল কে চুমু খেতে শুরু করলেন। অন্য কনস্টেবল ও অফিসার এসে লাঠির ঘা দিতেই জিপের ছাদে উঠে শুয়ে পড়লেন। অনেক কষ্টে পুলিশ তাকে বগলদাবা করে থানার উদ্দেশ্যে রওনা হতেই, আমাদের মধ্যে কে তাকে ছাড়াতে যাবে, তাই নিয়ে শুরু হল ঝগড়া। কারণ, ওনার মত না হলেও সবাই অল্প বিস্তর ভাং মেশানো ঠান্ডাই খেয়েছিলাম।
আলোচনা (ঝগড়া) করতে করতে বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেছে, হঠাৎ এক পরিচিত রিকশা চালক এসে খবর দিলেন যে বন্ধুটির পাগলামো তে অতিষ্ট হয়ে তাকে থানার বাইরে বার করে দিয়েছেন ওসি। কিন্তু তিনি নাছোড়বান্দা, লক আপে যাবেনই, কারণ গরাদের শিক দিয়ে তৈরি হবে শিক কাবাব।
অবশেষে সেই রিকশা চালক কেই কিছু টাকা দিয়ে বলা হল একটু নেশা কমলে তাকে যেন বাড়ি পৌঁছে দেয়।
তার এই রূপ দেখে আমরা পালাবো না তো কি করব বলুন? তবে মূল কাহিনী যে এখনও বাকি ছিল, সেটা পরে বুঝলাম।
তার এই রূপ দেখে আমরা পালাবো না তো কি করব বলুন? তবে মূল কাহিনী যে এখনও বাকি ছিল, সেটা পরে বুঝলাম।
পরেরদিন সকালে ক্লাবে আসতেই তাকে নিয়ে যখন মজা করা হচ্ছে, তারই মধ্যে অনেক বুঝিয়ে তাকে বলা হল যে কিভাবে বন্ধুরাই তাকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু তিনি হঠাৎ রেগেমেগে বলে উঠলেন, "কাল রাতে তোরা আমায় বাড়ি আনার ব্যবস্থা করেছিলি? মিথ্যে কথা বলার জায়গা পাসনি? আমি বাড়ি ফিরেছি আজ সকালে।"
উল্টে আমরা থতমত খেয়ে গেলাম। কেসটা কি? অনেক বাবা বাছা করে জিজ্ঞেস করাতে উনি বললেন - " কাল পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে গেল আর তোরা সবাই পালিয়ে গেলি। আমি বুঝে গেলাম, আমি একা। লক আপের রড বেঁকিয়ে থানা থেকে পালিয়ে এলাম। আমিও দৌড়চ্ছি, পিছনে পুলিশও। দৌড়াতে দৌড়াতে এয়ারপোর্টের পাঁচিল দেখতে পেয়েই টপকে ঢুকে পড়লাম টারম্যাকে। পুলিশ গুলোও নাছোড়বান্দা, দেখি তখনও ধাওয়া করছে, সাথে এয়ারপোর্টের পুলিশকেও ডেকে এনেছে। সব দিক দিয়ে যখন আমায় ঘিরে ফেলেছে প্রায়, তখনই একটা প্লেন টেক অফ করছিল। আমিও উপায় না দেখে লাফ দিয়ে প্লেনের ল্যাজ ধরে ঝুলে পড়লাম আর প্লেনটা আমায় নিয়ে দুবাই চলে গেল।"
এতো অবধি শুনে আমি ঢোক গিলে বললাম, "ফিরলি কি করে?"
"বলছি তো!! দুবাই এয়ারপোর্টে নেমে হাটতে হাটতে গিয়ে যেই না একটা এগ চিকেন রোল কিনে দু কামড় দিয়েছি, ওখানকার পুলিশ আবার তাড়া করল। আবার দৌড়। সেই এয়ারপোর্ট। সেই প্লেনটা তখন আবার ঘুরে কলকাতার জন্যে টেক অফ করছিল, লেজ ধরে চলে এলাম।"
এতো অবধি শুনে আমি ঢোক গিলে বললাম, "ফিরলি কি করে?"
"বলছি তো!! দুবাই এয়ারপোর্টে নেমে হাটতে হাটতে গিয়ে যেই না একটা এগ চিকেন রোল কিনে দু কামড় দিয়েছি, ওখানকার পুলিশ আবার তাড়া করল। আবার দৌড়। সেই এয়ারপোর্ট। সেই প্লেনটা তখন আবার ঘুরে কলকাতার জন্যে টেক অফ করছিল, লেজ ধরে চলে এলাম।"
ভাং খাওয়ার ২৪ ঘন্টা বাদেও বন্ধুটির নেশা না কাটায় সেই দিনই ওই জিনিসকে নমস্কার করেছিলাম। উনিও অবশ্য সেইদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে "দোলির" দিন রং খেয়ে রোদ মেখে ভাঙের মধ্যে আর বেরোবেন না।
ছবি - অন্তর্জাল
Comments
Post a Comment