গলানো সোনা
"ও ফেলু বাবু, বলছি সোনার কেল্লার কেস তো সলভ করে দিলেন, এবার এদিকটাও একটু দেখুন।"
"আবার কোন কেস?"
"আরে, কি সব লেখা বেরোচ্ছে কাগজে, বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, গলানো সোনা - দেখেছেন??"
রবিবারের বিকেলে কাগজের শব্দছক মেলাতে মেলাতে চোখ তুলে লালমোহন বাবুকে একবার মেপে নিলো ফেলুদা। কাগজটা হাত থেকে সেন্টার টেবিলে রেখে একটা চারমিনার জ্বালিয়ে ফেলুদা বলল "ওসব বিজ্ঞাপনের চমক। এর আগেও সর্ষের তেল কোম্পানি গুলো এই ভাবেই বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আপনার স্মৃতিশক্তি দূর্বল লালমোহন বাবু।"
"তাহলে চিন্তার কিছু নেই বলছেন?" একটা দেতো হাসি দিয়ে জটায়ু ডাল মুটের দিকে হাত বাড়ালেন।
"আবার কোন কেস?"
"আরে, কি সব লেখা বেরোচ্ছে কাগজে, বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, গলানো সোনা - দেখেছেন??"
রবিবারের বিকেলে কাগজের শব্দছক মেলাতে মেলাতে চোখ তুলে লালমোহন বাবুকে একবার মেপে নিলো ফেলুদা। কাগজটা হাত থেকে সেন্টার টেবিলে রেখে একটা চারমিনার জ্বালিয়ে ফেলুদা বলল "ওসব বিজ্ঞাপনের চমক। এর আগেও সর্ষের তেল কোম্পানি গুলো এই ভাবেই বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আপনার স্মৃতিশক্তি দূর্বল লালমোহন বাবু।"
"তাহলে চিন্তার কিছু নেই বলছেন?" একটা দেতো হাসি দিয়ে জটায়ু ডাল মুটের দিকে হাত বাড়ালেন।
ফেলুদা দুটো ধোঁয়ার রিং ছেড়ে বলে উঠলো "আসল গলানো সোনা দেখেছেন কখনও?"
"না, ইয়ে মানে, ব্যাপারটা....... হে হে, ওই সর্ষের তেল যদি বলেন, তাহলে হ্যা বলতে পারি।"
"ধুর মশাই, সর্ষের তেল কে আমি গলানো সোনার হিসেবেই ধরি না। আমার মতে গলানো সোনা অন্য।" ক্যারমের স্টাইকারের মত করে চারমিনারের শেষ টা জানলার বাইরে ফেলে ফেলুদা বলল "ভাদ্র মাসে পাকা তাল দেখেছেন। বাড়ি এনে কালো ছাল ফেলে, জল আছাড়ি দিয়ে আঁটি গুলোকে একটু হালকা থাবড়ে নেবেন। আগেকার দিনে বেতের ঝুড়ির উপরে ঘষতে হত আঁটিগুলো। এখন অবশ্য গ্রেটিং প্লেটেই ঘষে কাই বার করে নিলেই হল। আঁটিগুলো ঘষতে ঘষতে হালকা করে জলে ভিজিয়ে নেবেন। যখন আঁটিগুলো রবি ঠাকুরের দাড়ির মত সাদা হয়ে আসবে, জানবেন প্রাথমিক কাজ কমপ্লিট।"
"তারপর?"
"একটা নতুন গামছা বা না থাকলে ধুতির টুকরো নেবেন। কাইটা তার মধ্যে দিয়ে ভালো করে ছেঁকে নিতে হবে যাতে আঁশ না থাকে। পরিমাণ মত ফুল ফ্যাট দুধ ও জল দিয়ে কাইটা একটু পাতলা করে কড়াইয়ে দিন। লো ফ্লেমে জাল দিতে থাকুন। দুটো ছোট এলাচ মাথা চিরে দিয়ে দিন, এবং মিনিট পাঁচেক বাদে সেটা তুলে ফেলে দিন। দাঁত কিড়কিড় করে, এমন চিনি লাগবে, সাথে মিহি করে আধ মালা নারকোল কোড়া। জাল হতে হতে যখন দেখবেন ছিটতে শুরু করেছে তখন গুড়ো দুধ লাগবে।"
"মানে, গুড়ো দুধ জলে গুলে মেশাবো না ডাইরেক্ট কড়াইয়ে?"
আরেকটা চারমিনার জ্বালিয়ে একটা রিং ছেড়ে মুচকি হাসল ফেলুদা। "তাহলে আর ফেলু মিত্তিরের ক্যাপা কি রইল? না জলে, না ডাইরেক্ট। একটা পাত্রে তিন চার হাতা তরল ক্ষীর তুলে নিতে হবে। তার মধ্যে মিশিয়ে নিলে ঢেলা পাকাবে না। আবার এক্সট্রা জল ও যাবে না। পুরো জমে ক্ষীর হয়ে যাবে দেখবেন ব্যাপারটা। ওটাই হল গলানো সোনা।"
"তারপর?"
"একটা নতুন গামছা বা না থাকলে ধুতির টুকরো নেবেন। কাইটা তার মধ্যে দিয়ে ভালো করে ছেঁকে নিতে হবে যাতে আঁশ না থাকে। পরিমাণ মত ফুল ফ্যাট দুধ ও জল দিয়ে কাইটা একটু পাতলা করে কড়াইয়ে দিন। লো ফ্লেমে জাল দিতে থাকুন। দুটো ছোট এলাচ মাথা চিরে দিয়ে দিন, এবং মিনিট পাঁচেক বাদে সেটা তুলে ফেলে দিন। দাঁত কিড়কিড় করে, এমন চিনি লাগবে, সাথে মিহি করে আধ মালা নারকোল কোড়া। জাল হতে হতে যখন দেখবেন ছিটতে শুরু করেছে তখন গুড়ো দুধ লাগবে।"
"মানে, গুড়ো দুধ জলে গুলে মেশাবো না ডাইরেক্ট কড়াইয়ে?"
আরেকটা চারমিনার জ্বালিয়ে একটা রিং ছেড়ে মুচকি হাসল ফেলুদা। "তাহলে আর ফেলু মিত্তিরের ক্যাপা কি রইল? না জলে, না ডাইরেক্ট। একটা পাত্রে তিন চার হাতা তরল ক্ষীর তুলে নিতে হবে। তার মধ্যে মিশিয়ে নিলে ঢেলা পাকাবে না। আবার এক্সট্রা জল ও যাবে না। পুরো জমে ক্ষীর হয়ে যাবে দেখবেন ব্যাপারটা। ওটাই হল গলানো সোনা।"
"আপনি যা ডেসক্রিপশন দিলেন মশাই, এক বাটি পেলে এক চুমুকে নামিয়ে দেব।"
"উহহু, চুমুক দিয়ে খায় না এ জিনিস। একটা চামচ নেবেন, কিন্তু ভুলেও সোজা দিক দিয়ে না। উল্টো পিঠে অল্প ক্ষীর নিয়ে জিভের উপর রেখে দেখবেন, মোক্ষলাভ হয়ে যাবে। আস্তে আস্তে পুরোটা খেয়ে এমন ভাবে বাটি চামচ চাটবেন, যেন ভিম লিক্যুইড এর লেবুর শক্তিও ফেল মেরে যায়। তবেই জানবেন, তাল ক্ষীর ঠিক মতো তৈরি হয়েছে।"
excellent
ReplyDeleteThanks
Delete