স্লিম নয় পাতি রোগা
স্লিম নয় পাতি রোগা। কাউকে কতটা রোগা দেখেছেন? তাল পাতার সেপাই বা কাকতাড়ুয়া বলে ছোটবেলা থেকে সবাই ডাকতো। নিজের দাদাকে না হয় ছেড়েই দিলাম, স্কুলের বন্ধু-বান্ধবীরা আছে। রোগার লেভেলটা জানতে চাইলে তারা সাক্ষী হতে পারে। এমনকি আমার স্কুলের টিচাররাও ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন, ওনারাও চাইলে বলতে পারেন। টিংটিংয়ে বা প্যাঙা এসব খেতাব যাদের দিয়েছেন, তাদের চেহারা কল্পনা করে, তার থেকেও রোগা যদি কোনো চেহারা আপনার মনে ভেসে ওঠে, আমি অনেকটা তেমন ছিলাম। বিশ্বাস না হলে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। পড়তাম ক্যালকাটা এয়ারপোর্ট ইংলিশ হাই স্কুলে, এয়ারপোর্ট ২ নং গেটের কাছে। ক্লাস ৮, ৯ ও ১০ ওই বিল্ডিংএই পড়েছি। স্কুলের জানালার গ্রিল গুলো ঠিক ইটের গাঁথনীর মতো ডিজাইন। এবং আমি তার মধ্যে দিয়ে গলে যেতে পারতাম। বহুবার করেছি। বাজারে হেন কোনো হেলথ ড্রিংক ছিল না যা বাবা-মা আমার উপর প্রয়োগ করেনি। এখনকার মতো কনজিউমার কোর্টের এত রমরমা থাকলে প্রত্যেক কোম্পানিকে আমি কাঠগড়ায় তুলতে পারতাম।
মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের পর ডিপ্লোমা, যাদবপুর। ট্রাডিশন বজায় ছিল বহাল তবিয়তে। ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯৬ রক্তদান শিবির, আমায় ধরে নিয়ে গেল এক সিনিয়ার। ডাক্তার আমার ওজন দেখে বললো একে এমনিই দুধ-ডিম-কলা খাওয়াও। বছর খানেক খেয়ে যদি রক্ত দিতে পারে।
দেখতে দেখতে ফাইনাল ইয়ার। আমি যে কে সেই। এক নামি কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ারের পদের জন্য ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ। তাদের একটা মেডিকেল ক্রাইটেরিয়া ছিল, ওজন মিনিমাম ৪৫ কেজি। রিটেন এ সব থেকে বেশি নাম্বার পেয়ে ভাইভার জন্য সিলেক্টেড, কিন্তু বলল আপনার ওজন চেক করব। যত বলি সে তো এপয়েন্টমেন্ট লেটার দিলে মেডিকেল করার কথা, কিন্তু ভবি ভোলবার নয়। বললাম ঠিক আছে ৮বি তে একটাকা দিয়ে সেই হিরো হিরোইনের ছবি দেওয়া টিকিট দেয়, নিয়ে আসছি। হবে না। সেকেন্ড হাফে ভাইভার সময় ওরা ওয়েট মেশিনে সবার ওজন দেখবে। আমার বন্ধু ভাগ্য খুব ভালো। কুছ পরোয়া নেহি, হাম তেরে সাথে হ্যায়। এক বন্ধুর বাইকে বসে চললাম। বেঙ্গল ল্যাম্প থেকে হাফ ডজন কলা কিনে বলল খেয়ে নে। পরের গন্তব্য হিন্দুস্থান সুইটস। গোটা আটেক রাজভোগ। তারপর জল। এরপর আমার পরম বন্ধুটি আর একটি জম্পেস কান্ড ঘটাল। যাদবপুর স্টেশনের কাছে চেনা এক দোকান থেকে দুটো ৫০০ গ্রামের বাটখারা জোগাড় করলো। হস্টেলে ঢুকে একটা হাফ প্যান্ট পরে তার দু পকেটে বাটখারা রাখতে বললো। বাটখারা থাকলেও প্যান্ট কোমড়ে থাকে না। আমার আবার স্পেশাল কোমড়, সবার বেল্ট আমার হয় না। শেষে পাজামার দড়ি দিয়ে হাফ প্যান্ট বেঁধে তার ওপর ফুল প্যান্ট চাপিয়ে আবার কলেজ। ওজনের মাপ দেব কি, হাসফাস করছি তো। একজন আবার বলে, এক লিটার জল......... আমার অগ্নিদৃষ্টি দেখে আর আমার উপকার করতে এগোয়নি। প্যাকাঠির মত চেহারা হলে কি হবে, মুখে মারিতং জগৎ ছিলাম, তায় আবার উনিয়নের ন্যাতা। বিশ্বাস করুন, এত কিছু করেও ওজনের কাঁটা ৪১ ছুই ছুই, এর বেশি আর এগোয়নি।
এক বন্ধু এই কমলাভোগগুলো দিয়ে যাওয়ায় পুরানো কথাগুলো মনে পড়ে গেল।
©সুব্রত চৌধুরী।
মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের পর ডিপ্লোমা, যাদবপুর। ট্রাডিশন বজায় ছিল বহাল তবিয়তে। ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯৬ রক্তদান শিবির, আমায় ধরে নিয়ে গেল এক সিনিয়ার। ডাক্তার আমার ওজন দেখে বললো একে এমনিই দুধ-ডিম-কলা খাওয়াও। বছর খানেক খেয়ে যদি রক্ত দিতে পারে।
দেখতে দেখতে ফাইনাল ইয়ার। আমি যে কে সেই। এক নামি কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ারের পদের জন্য ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ। তাদের একটা মেডিকেল ক্রাইটেরিয়া ছিল, ওজন মিনিমাম ৪৫ কেজি। রিটেন এ সব থেকে বেশি নাম্বার পেয়ে ভাইভার জন্য সিলেক্টেড, কিন্তু বলল আপনার ওজন চেক করব। যত বলি সে তো এপয়েন্টমেন্ট লেটার দিলে মেডিকেল করার কথা, কিন্তু ভবি ভোলবার নয়। বললাম ঠিক আছে ৮বি তে একটাকা দিয়ে সেই হিরো হিরোইনের ছবি দেওয়া টিকিট দেয়, নিয়ে আসছি। হবে না। সেকেন্ড হাফে ভাইভার সময় ওরা ওয়েট মেশিনে সবার ওজন দেখবে। আমার বন্ধু ভাগ্য খুব ভালো। কুছ পরোয়া নেহি, হাম তেরে সাথে হ্যায়। এক বন্ধুর বাইকে বসে চললাম। বেঙ্গল ল্যাম্প থেকে হাফ ডজন কলা কিনে বলল খেয়ে নে। পরের গন্তব্য হিন্দুস্থান সুইটস। গোটা আটেক রাজভোগ। তারপর জল। এরপর আমার পরম বন্ধুটি আর একটি জম্পেস কান্ড ঘটাল। যাদবপুর স্টেশনের কাছে চেনা এক দোকান থেকে দুটো ৫০০ গ্রামের বাটখারা জোগাড় করলো। হস্টেলে ঢুকে একটা হাফ প্যান্ট পরে তার দু পকেটে বাটখারা রাখতে বললো। বাটখারা থাকলেও প্যান্ট কোমড়ে থাকে না। আমার আবার স্পেশাল কোমড়, সবার বেল্ট আমার হয় না। শেষে পাজামার দড়ি দিয়ে হাফ প্যান্ট বেঁধে তার ওপর ফুল প্যান্ট চাপিয়ে আবার কলেজ। ওজনের মাপ দেব কি, হাসফাস করছি তো। একজন আবার বলে, এক লিটার জল......... আমার অগ্নিদৃষ্টি দেখে আর আমার উপকার করতে এগোয়নি। প্যাকাঠির মত চেহারা হলে কি হবে, মুখে মারিতং জগৎ ছিলাম, তায় আবার উনিয়নের ন্যাতা। বিশ্বাস করুন, এত কিছু করেও ওজনের কাঁটা ৪১ ছুই ছুই, এর বেশি আর এগোয়নি।
এক বন্ধু এই কমলাভোগগুলো দিয়ে যাওয়ায় পুরানো কথাগুলো মনে পড়ে গেল।
©সুব্রত চৌধুরী।
Comments
Post a Comment