আমার ভ্যালেন্টাইন

বাবা প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সেন মহাশয়ের মেয়ের সাথে। মেটে রঙের শাড়ি ও তার সাদা আঁচল। দুধে আলতা গায়ের রং। ভারী নরম ও মিষ্টি স্বভাবের। বাল্যকালেই অসমবয়সী প্রেমে পড়ে গেলাম। উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির মেয়ে, ইচ্ছা থাকলেও বাগুইআটি থেকে গিয়ে রোজ রোজ দেখা সাক্ষাৎ সম্ভব নয়। তাই নববর্ষ বা পুজোর আগে দিয়ে ওইদিকে গেলেই টুক করে তার সাথে দেখা করে আসতাম। কিশোর বয়েসে বাবা আলাপ করিয়ে দিলেন বলরাম বাবুর মেয়ের সাথে। একটু রাশভারী হলেও স্বভাবে মিষ্টতা বেশি। তবে সখ্যতা গড়ে তুলতে পারলাম না সেরকম। এলাকায় যারা থাকতো তাদের পিছনেই ঘুরঘুর করতাম। স্কুল পেরিয়ে কলেজে গেলাম। তারপর এলো সে মাহেন্দ্রক্ষণ। পাড়ার মুখে নতুন যে বাড়িটা হলো, তার একতলায় দেখতে পেলাম আমার প্রেয়সীকে। আমার ভ্যালেন্টাইন। সেই মেটে রঙের শাড়ি ও তার সাদা আঁচল। রংটা যেন আরো ঘন দুধে আলতা। একরাশ সুমধুর গাম্ভীর্যের জমাট আস্তরণে নিজের নরম ও মিষ্টি পারসোনালিটিটা ঢেকে রাখা। চোখাচুখি হতেই প্রেমে পড়ে গেলাম। তাকে পেয়ে জীবন যেন ধন্য হয়ে গেল।
আজ বিয়ের ন বছর পরেও, গুজরাত প্রবাসী হয়ে গেলেও, পাড়ায় ঢোকার মুখে তার সাথে দেখা হয়। প্রেমালাপ ও চলে। আমার অর্ধাঙ্গিনী দুঃখ করে বলে "আমি বোধহয় দুয়ো রানী হয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেব"। হয়তো বা সত্যি। কারণ সে আমার চিরন্তন ভ্যালেন্টাইন। 

বাগুইআটি জোড়ামন্দির শাস্ত্রীবাগান ক্লাবের পাশে VIP SWEETS এর মিষ্টি দই।

© সুব্রত চৌধুরী

Comments

Popular posts from this blog

কার্তিক পুজো ও খাওয়াদাওয়া

তালশাঁস সন্দেশ

পুজো ও বামুন