Posts

Showing posts from March, 2019

গনাদার সরকারি চাকরি

Image
#গনাদার_সরকারি_চাকরি পেটুক গনাদা একটা সরকারি চাকরি পেয়েছে। এক বছরের প্রবেশন পিরিওড কাটিয়ে দিতে পারলেই পার্মানেন্ট। খুশি আর ধরে না। এতদিন পাড়ার সেন্টুদা কে সরকারি চাকরি করতে দেখে খুব হিংসে হত, শালা আসে যায় আর মাইনে পায়। চাকরিতে যোগ দিতেই ভোট কর্মীদের জন্যে ভোটের আগেরদিন ও ভোটের দিন রান্নার যে অর্ডার দেওয়া হয়েছে, সেই ওয়ার্ক অর্ডার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। বড় সাহেব বলে দিলেন, "পেটুকপুর বিধানসভার ভোটের সেন্ট্রাল ক্যাম্প, বয়েজ স্কুলে হয়েছে, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী রান্না করানো থেকে ভেন্ডারের বিল চেক করে ফরওয়ার্ড করার দায়িত্ব আপনার।" গনাদা মহা খুশি এমন দায়িত্ব পেয়ে, উফফ সেন্টুদা এতদিন কি মজাটাই না করেছে। ২০০০ লোকের জন্যে পাড়ার পুজো প্যান্ডেলে ভোগের রান্না বা বিজয়া সম্মিলনীর রান্না করানোতে গনাদা এক্সপার্ট লোক। এখানে হাজার আটেক লোক, এ আর এমন কি ব্যাপার? এইটাই আগের প্রাইভেট চাকরিতে হলে কাউকে অর্ডার না দিয়ে কর্মচারীদের দিয়েই বাজার করাতো, পারলে রান্নাটা ও। রান্না বেশ ভালোই হয়েছিল। শুধু ভোটের আগেরদিন রাত্রে মটনের ঝোলের জায়গায় কষা করেছিল, কিন্তু এত জম্পেশ নামিয়েছিল ...

চিপ্স, প্লেন সল্টেড চিপ্স

Image
#চিপ্স এই জিনিসটি আমার দু চোখের বিষ। তবে ছোটবেলার থেকে নয়, বিয়েবেলার জাস্ট আগে থেকে। তাও সব চিপ্স নয়, প্লেন সল্টেড চিপ্স। এরেঞ্জড ম্যারেজ হলেও বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর প্রায় মাস চারেক হাতে ছিল প্রাক বিবাহ প্রেমপর্বের। দুই পরিবারই এব্যাপারে একটু অর্থোডক্স। আমার বাড়িতে বাবা-মা-দাদা-বৌদি হলেও, মহারানীর পরিবারটা আবার খুব "ছোট"। বাড়িতে মোটে ৩৪ জন ভোটার তখন। ওবাড়ির কাচ্চা-বাচ্চা ও শহরের বাকি আত্মীয়স্বজন না হয় বাদ দিলাম। টালি থেকে টালা, বা মিলেনিয়াম পার্ক থেকে গঙ্গার ঘাটের নালা, যেখানেই যাও, কোনো না কোনো বঙ্গীয় সিসিটিভি'র নজরে পড়ার চান্স একশ শতাংশ। এহেন ব্রিগেডের চোখ থেকে বাঁচতে একটা উপায় শেষ অবধি বার করলাম। মহারানী অবশেষে রাজি হলেন অভিসারে, হলুদ-কালো ট্যাক্সিতে। জামশেদপুর থেকে দুপুরের ট্রেনে হাওড়া, অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। মহারানীকে নিয়ে সোজা ট্যাক্সিতে। ড্রাইভার ভায়াকে বললাম চালাতে থাকো, যা মিটার উঠবে তার থেকে পঞ্চাশ টাকা বেশি দেব। এক্সপিরিয়েন্সড ভদ্রলোক মনে হয়। মুচকি হেসে, লুকিং গ্লাস্টাই ঘুরিয়ে দিলেন। প্রাথমিক জড়তা বা আড়ষ্ঠতা  কাটিয়ে সহজ হতে হতেই বিদ্যাসাগর স...

ন্যাপা দা গ্রেট

Image
#ন্যাপা_দা_গ্রেট নেপোলিয়ান স্বর্গে বসে সুরা পান করছেন। সাথে চিকেন কষা। মনোরম পরিবেশ, তবু নিচে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলেছেন। পাশ দিয়ে সেলুকাস যাচ্ছিলেন। চিকেনের লেগ পিস টা দেখে খুব লোভ হল ওনার। নেপোলিয়ানের পাশে বসে জিজ্ঞেস করলেন, "কি রে ন্যাপা, উদাস কেন? কি হল?" "আর বলিস না সেলু, খুব দুঃখ হচ্ছে জানিস।" "কেন?" "আমার কাছে যদি কেজিবি বা সিআইএ থাকত বা আমেরিকা, রাশিয়ার মত মিলিটারি, ওয়াটারলু এর লড়াই টা জিতে যেতাম।" "তাতে কি হত?" "লোকে অন্তত ওয়াটারলু তে হেরে যাওয়া আর সেন্ট হেলেনা তে নির্বাসন নিয়ে কথা না বলে আমার সম্বন্ধে ভালো ভালো কথা বলত।" "ন্যাপা, তোর মাথাটা মোটাই রয়ে গেল। আমি আজকের যুগেও তোর ইচ্ছা পূর্ণ করতে পারি।" "কি করে?" "লেগপিস টা আগে কালটি মেরে সাইড করতে দে, তারপর বলছি।" সেলুকাস আয়েশ করে পুরো লেগপিস টা সাটিয়ে বলল "ন্যাপা, আমি জীবিত অবস্থায় এক বিচিত্র দেশ দেখে এসেছিলাম। তুই একবার ঐদিকে তাকিয়ে দেখ। ওখান থেকে শুধু অর্ণব আর সুমন কে তুলে আন। দু দিনের মধ...

খাটিয়ে খাওয়া

Image
ক্যাটারার আসার সাথে সাথে রান্নার ঠাকুর, ভিয়েন এগুলো যেমন উঠে গেল, তেমনই লম্বা টেবিল ও কাঠের নড়বড়ে চেয়ার এবং বালতি হাতে পাড়ার ছেলেদের / আত্মীয়দের খাবার পরিবেশন করাও হারিয়ে গেল। এবং তারই সাথে উঠে গেল সেই পরিবেশকদের জন্যে অনুষ্ঠানের দু চার দিন বাদে আয়োজিত "খাটিয়ে খাওয়া"র রীতি। লম্বা টানা টেবিল এর একেকটাতে ৬ জন বসতে পারতো। সাথে বাচ্চা থাকলে বা ব্যাচ ফুল হয়ে গেছে কিন্তু কারোর বিশেষ তাড়া থাকলে একটু চেপে চুপে ৭ জন কেও বসিয়ে দিত লোকজন। তবে ওই কাঠের চেয়ারে বসা একটা চাপের ব্যাপার। কোনটা কখন কোনদিকে নড়ে উঠবে আর আপনাকে পাশের অতিথির গায়ে গিয়ে পড়তে হবে না টেবিলের মাটির গ্লাসের জল উল্টে ফেলে হাসির খোরাক হতে হবে, সেটা দেব না জানতি। নতুন ব্যাচ শুরুর আগে প্রত্যেকটা টেবিলে জল ছিটিয়ে কাগজ বিছিয়ে দিতে হতো। এই কাজে মোটামুটি পরিবেশক দলের গুরুত্বপূর্ণ দুজন সদস্য থাকত, কারণ "সা" করে কাগজের রোল গড়িয়ে দেওয়া ও তারপরে শেষ প্রান্তে টেবিলের কোনায় খোঁচা দিয়ে ঘচ করে ছিড়ে ফেলা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। এরপর কলাপাতা / শালপাতা, মাটির গ্লাস, গ্লাসে জল ও পাতার কোনায় নুন লেবু, এ...

"দোলি হ্যায়"

Image
"কি রে, কাল কেমন কাটলো?" ইচ্ছা করেই মজা নেওয়ার জন্যে প্রশ্নটা করলাম। "একদম কথা বলবি না তোরা। বন্ধুর নামে কলঙ্ক। আমায় একলা ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গেলি সব।" না পালাবে না! ওনাকে পুজো করবে!!! খেয়েছিলেন খালি পেটে তিন গেলাস ভাং দেওয়া ঠান্ডাই। তারপর বেশ কিছুক্ষণ ক্লাবের ঘরে টান টান হয়ে শুয়ে ছিল, উঠে ক্যারাম খেলতে গেলেন। কিন্তু ক্যারাম বোর্ডের বিট হঠাৎ করেই রূপান্তরিত হয়ে গেল ডার্ক চকোলেটে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার বৃথা চেষ্টা করে তিনি মতিচুরের লাড্ডু দেখতে পেলেন, ক্যারাম বোর্ডের উপরে ঝুলন্ত ২০০ ওয়াটের বাল্বে। যতই বোঝানো হয়, উনি লক্ষ্যে অবিচল। শেষ অবধি "যা পারিস কর" বলে ছেড়ে দিতেই উনি জ্বলন্ত বাল্বে ঠোঁট ছুঁইয়ে ছ্যাকা খেতেই সে কি কান্না। আমরা যতই সান্তনা দিতে যাই, মহাশয়ের কানে কিছুই ঢোকে না। তার একটাই গো, "আমার মা আদর করে হাত বুলিয়ে দিলেই কমে যাবে।" আর আমরা তো জানি, কাকিমা ওকে এই অবস্থায় দেখলে, ওর সাথে আমাদেরও চ্যালা কাঠ দিয়ে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেবে। তাই তাকে যেনতেন প্রকারে নিরস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু...