Posts

Showing posts from June, 2018

হাফ ম্যাড না ফুল?

Image
"এখন যেতে পারলে যাও। কিন্তু কাল দুপুর দুটোর মধ্যে যেন সাইটে দেখতে পাই।" কথাটা বলে গোস্বামীদা দূর্গাচকে নিজের ভাড়া বাড়িতে ঢুকে গেলেন। ২২ শে জানুয়ারি ২০০৭। হলদিয়ায় কর্মরত, সিমপ্লেক্স এ। টাটা হুগলি মেট কোক প্রজেক্টের সেকেন্ড ফেসের প্রীকাস্ট পাইলিং এর কাজ। ২৪ তারিখ প্রথম পাইল কাস্ট হবে ও হেড অফিস থেকে অনেক বড় সাহেব আসবেন। CEO ও আসতে পারেন। কিন্তু গোল বেঁধেছে এই যে ২৩ তারিখ সরস্বতী পুজো। এবং পৈতে হওয়ার পর থেকে বরাবর বাড়ির পুজো আমি নিজেই করে এসেছি। গোস্বামীদা সাইট ইনচার্জ, আমি অনেকটা জুনিয়ার হলেও অলিখিত সেকেন্ড ইন্ কমান্ড। সকাল থেকে ঘ্যান ঘ্যান করে চলেছি "রবিবার বাড়ি না গিয়ে সব ব্যবস্থা তো করে দিয়েছি, পরশুদিনের কোনো কাজ আটকাবে না। আমায় বাড়ি যেতে দাও, কাল সেকেন্ড হাফেই চলে আসবো।" গোস্বামীদা কিছুতেই রাজি না। শেষ অবধি সন্ধ্যে সওয়া সাতটার সময় বাড়ি ঢোকার আগে অমন "শর্তাধীন জামিন" মঞ্জুর করে গেল। হয়ত ভেবেছিল এখন আর কি করে যাবে। কুকরাহাটি থেকে রায়চকের লাস্ট লঞ্চ পৌনে আটটায়। দূর্গাচক থেকে পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব। মুহুর্তের মধ্যে হিসেব কষে শুধু বললাম...

ঘুঙুরের আওয়াজ (ভূতের গল্প)

১৯৬৯ সাল। বাজার এলাকার একটি পুরনো বাড়িতে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ অফিস। সদ্য এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পদে পদোন্নতি পেয়ে ওই ব্রাঞ্চের দায়িত্ব বর্তেছে সুবীর বাবুর উপর। তখন কম্পিউটার তো দূর অস্ত, ক্যালকুলেটর বলতেও ইয়া বড়ো একটি মেশিন। তাও সব ব্রাঞ্চে থাকত না। লোন থেকে শুরু করে জমা, সুদ, সব হিসেব কাগজে কলমে। কর্মিসংখ্যা কম থাকায় বাড়তি কাজ করতে হ'ত অবিবাহিত সুবীর বাবুকে। পাঁচটায় সবাই বেরিয়ে গেলেও ব্রাঞ্চ হেড হিসেবে একাই বসে বসে কাজ করতেন অনেকক্ষন। অফিস থেকে বেরোতে বেরোতে প্রায়ই সন্ধ্যে সাতটা - সাড়ে সাতটা। তিনতলা বাড়ির একতলাতে দুটো দোকান ও একটা গ্যারেজ, দোতলায় ব্যাংককে ভাড়া দিয়ে উপরতলা বাড়িওয়ালার। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক পরিবার নিয়ে মাঝে সাঁঝে আসেন, থাকেন দিল্লিতে। আর আছে ব্যাংকের ও বাড়ির দারোয়ান, রাম সিং। সিড়ির তলায় ছোট্ট কুঠুরিতে থাকে মরচে ধরা দো নলা বন্দুক নিয়ে, নিজে রান্না করে খায়। সুবীরবাবু সন্ধ্যের পর কাজ করলে, কলাপসিবল গেটটা বন্ধ করে সিড়ির তলায় গিয়ে রাতের রান্না করে। কাজ শেষ করে সুবীরবাবু ডাকলে ওনাকে বার করে দরজায় তালা লাগিয়ে তবে ছুটি। সূর্যাস্তের পর সুবীরবাবু কাজ...

উঠল বাই তো পাতুরি খাই

Image
পাতুরি খাওয়ার ব্যাপারে আমার আবার একটু দুর্নাম আছে। ছোটবেলায় প্রথম যখন পাতুরি পাতে পড়ে, আমি তখন ক্লাস ২তে পড়ি। জনশ্রুতি আছে, মাছের ভক্ত আমি নাকি পাতুরির গন্ধে মোহিত হয়ে কলাপাতা সমেত কামড় বসিয়েছিলাম। আমার এহেন খাওয়া দেখে সবাই হেসে উঠলেও, নিমন্ত্রয়িতা দাড়িয়ে থেকে আমার পাতে গোটা ছয়েক পাতুরি পরিবেশন করিয়েছিলেন (পাতা ছাড়িয়ে) ও আমি অবলীলায় সেগুলো উদরস্থ করেছিলাম। এবং তার পর থেকে আমার কোনো অনুষ্ঠান বাড়ির নিমন্ত্রণে খাওয়াদাওয়ার উপর কড়া নজরদারি থাকত। এ হেন পাতুরি কেলেঙ্কারি আরেকবার ঘটিয়েছিলাম নিজের দাদার বিয়েতে। বৌদিদের বাড়িতে ভেটকির পাতুরি হয়েছিলো। বিয়ের লগ্ন রাত দেড়টায়। পাতুরির গন্ধে মনটা আনচান করলেও ভাবছি বিয়েটা হলে একেবারেই দাদাবৌদির সাথে খাবো। রাত্রি এগারোটা নাগাদ বৌদির দাদা এসে জোর করে নিয়ে গিয়ে খেতে বসালো। ক্যাটেরার পরিবেশন করার সময় উনি নিজে দাড়িয়ে ছিলেন। উনিও পাতুরি দিতে বলছেন, পরিবেশনকারি দিয়েও চলেছেন ও আমি খেয়েও চলেছি। গোটা ২৫এক খেয়েছিলাম। এত অবধি ঠিক ছিল, কিন্তু ব্যাপারটার আফটার এফেক্ট টা একটু বলি। আমার এই স্বল্প খ্যাটনের জন্যে বৌদি সেদিন বিয়ের পর ...